Menu
গাছপালা ঘেরা একটি মাটির বাড়ির ছবি, যার সামনে বাঁশের বেড়া এবং একটি হাঁটার রাস্তা দেখা যাচ্ছে।

যেভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কক্সবাজারের ‘ইকোট্যুরিজম’

কক্সবাজারের প্যাঁচারদ্বীপ সৈকতে অবস্থিত মারমেইড বিচ রিসোর্ট যেন প্রকৃতি এবং আধুনিকতার এক অসাধারণ মেলবন্ধন। নারকেলগাছের ফাঁকে ফাঁকে সারিবদ্ধভাবে সাজানো কুঁড়েঘরগুলো এক পাড়াগাঁয়ের আবেশ তৈরি করে। ঘরের বাইরে মাটির দেয়ালে শোভা পাচ্ছে দৃষ্টিনন্দন চিত্রকর্ম, যা স্থানীয় সংস্কৃতির ছোঁয়া নিয়ে আসে। ভেতরে শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র, টেলিভিশন, ফ্রিজ, ইন্টারনেটসহ আধুনিক সব সুবিধা থাকলেও, এর প্রধান আকর্ষণ এর প্রাকৃতিক পরিবেশ। সমুদ্রের নীল জলরাশি এই পরিবেশকে আরও ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে।

কক্সবাজার শহর থেকে মেরিন ড্রাইভ ধরে ২০ কিলোমিটার দূরে গেলে প্যাঁচার দ্বীপ সৈকতে এই পরিবেশবান্ধব পর্যটনকেন্দ্রের দেখা মিলবে। মারমেইড বিচ রিসোর্টই প্রথম কক্সবাজারে ইকোট্যুরিজমের পথ দেখিয়েছিল। এর সাফল্যের পর গত পাঁচ-ছয় বছরে কক্সবাজার সৈকত, মেরিন ড্রাইভ এবং সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ৫০টিরও বেশি ইকোট্যুরিজম রিসোর্ট ও রেস্তোরাঁ গড়ে উঠেছে।

মারমেইড থেকেই শুরু

মারমেইড-এর যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০০৪ সালে, কক্সবাজারের সুগন্ধা পয়েন্টে একটি রেস্তোরাঁ দিয়ে। এরপর ২০০৯ সালে মেরিন ড্রাইভের রেজুখালের পাশে ১৫টি কটেজ নিয়ে চালু হয় ‘মারমেইড ইকোরিসোর্ট’। মারমেইডের প্রতিষ্ঠাতা আনিসুল হক চৌধুরী বলেন, পর্যটকেরা কক্সবাজারে প্রকৃতি দেখতে আসেন, কংক্রিটের জঙ্গল দেখতে নয়। এই ধারণাকে মাথায় রেখেই তিনি মারমেইড গড়ে তুলেছেন, যা প্রকৃতিকে রক্ষা করে পর্যটন বিকাশের এক দৃষ্টান্ত।

জলরাশির উপরে একটি ছনের ছাউনি দেওয়া ইকো-রিসোর্টের কুঁড়েঘর, যার দিকে কাঠের সেতু চলে গেছে।
সেন্ট মার্টিনের এই ইকো রিসোর্টটি ইকোট্যুরিজমের এক অনবদ্য উদাহরণ। এখানে আধুনিক সব সুবিধা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাথে এমনভাবে মিশে আছে, যেখানে আপনি পরিবেশবান্ধব জীবনযাপনের এক দারুণ অভিজ্ঞতা পাবেন।

মারমেইডকে অনুসরণ করে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ৪০টিরও বেশি ইকোরিসোর্ট তৈরি হয়েছে, যেমন সিন্দাবাদ রিসোর্ট, দীপান্বিতা, জ্যোৎস্নালয়, কিংসুক, স্যান্ডক্যাসল ইত্যাদি। একইভাবে মেরিন ড্রাইভের দুই পাশেও মোননেস রিসোর্ট, নীলিমা রিসোর্ট, সাওয়ারি ক্যাফে-এর মতো অনেক পরিবেশবান্ধব প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।

পর্যটনে পরিবেশ রক্ষার তাগিদ

ইকোট্যুরিজমের মূল উদ্দেশ্য শুধু পর্যটন নয়, এর পাশাপাশি পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা। উদাহরণস্বরূপ, কক্সবাজার সৈকতে ডিম পাড়তে আসা মা কাছিমদের সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে মারমেইড বিচ রিসোর্টে একটি বড় কাছিমের ভাস্কর্য তৈরি করা হয়েছে। এটি পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি পর্যটকদের কাছে এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরে।

কক্সবাজারের হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান মনে করেন, ইকোট্যুরিজমের এই প্রবণতা যদি বাড়ে, তাহলে কক্সবাজারের পরিবেশ রক্ষা পাবে এবং পর্যটনে নতুন মাত্রা যোগ হবে।

যেকোনো প্রয়োজনে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

world travels

owner
View All Articles