Menu

হজ্জের ওয়াজিব কাজগুলো কী কী? জেনে নিন!

ইসলামের স্তম্ভগুলোর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি স্তম্ভ হলো পবিত্র হজ্জ পালন করা। প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জীবনে একবারের জন্য হলেও হজ্জ পালন করা ফরজ। হজ্জের প্রতিটি আমল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং এর প্রতিটি ধাপ শরীয়তের নিয়ম অনুযায়ী পালন করা জরুরি।

হজ্জের কিছু কাজ ওয়াজিব, যা পালন করা আবশ্যক। কোনো ওয়াজিব ছুটে গেলে দম (কুরবানি) দিয়ে এর ক্ষতিপূরণ করা যায়। আসুন, হজ্জের সেই সাতটি ওয়াজিব কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই:

১. মুযদালিফায় রাত যাপন করা:

৯ই যিলহজ্জ তারিখে হাজিগণ আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের পর সন্ধ্যায় মুযদালিফার দিকে রওনা হন। মুযদালিফায় পৌঁছে ফজরের পূর্ব পর্যন্ত অবস্থান করা ওয়াজিব। এখানে রাত্রিযাপন করা এবং ফজর নামাজ আদায় করা হজ্জের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

২. মিনায় পাথর নিক্ষেপ করা:

১০, ১১ ও ১২ই যিলহজ্জ তারিখে মিনায় অবস্থিত জামারাতের (ছোট, মধ্যম ও বড় শয়তানের স্তম্ভ) উপর পাথর নিক্ষেপ করা ওয়াজিব। এটি শয়তানের প্রলোভনকে প্রত্যাখ্যান করার প্রতীক এবং হযরত ইব্রাহিম (আঃ)-এর আনুগত্যের স্মরণে পালন করা হয়।

৩. কুরবানি করা:

যারা তামাত্তু ও কিরান হজ্জ পালন করেন, তাদের জন্য কুরবানি করা ওয়াজিব। আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করা হয়। এই কুরবানির মাংস হাজী এবং অভাবী মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়।

৪. মাথা মুণ্ডানো বা চুল ছাঁটা:

ইহরাম খোলার পূর্বে পুরুষদের জন্য মাথা মুণ্ডানো অথবা চুল ছোট করে ছাঁটা ওয়াজিব। মহিলাদের জন্য চুলের অগ্রভাগ সামান্য পরিমাণ কাটা বিধান। এটি হজ্জের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, যা ইহরামের নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তির ইঙ্গিত দেয়।

৫. সাফা ও মারওয়ার মধ্যে সাঈ করা:

কাবা শরীফের তাওয়াফ সম্পন্ন করার পর সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মধ্যে সাতবার দৌড়ানো বা হেঁটে যাওয়া ওয়াজিব। হযরত হাজেরা (আঃ)-এর শিশুপুত্র ইসমাঈল (আঃ)-এর জন্য পানির অনুসন্ধানের স্মৃতি ধারণ করে এই সাঈ করা হয়।

৬. বিদায়ী তাওয়াফ করা:

মক্কা থেকে বিদায় নেওয়ার পূর্বে কাবা শরীফের শেষ তাওয়াফ করা ওয়াজিব। তবে মক্কায় বসবাসকারী ব্যক্তিদের জন্য এই তাওয়াফ ওয়াজিব নয়। এটি হজ্জযাত্রীর পক্ষ থেকে পবিত্র কাবা শরীফের প্রতি শেষ সম্মান প্রদর্শন।

৭. মীকাতে ইহরাম বাঁধা:

হজ্জের নিয়ত করে মীকাত নামক নির্ধারিত স্থান অতিক্রম করার পূর্বে ইহরাম বাঁধা ওয়াজিব। মীকাতের বাইরে থেকে আগত প্রত্যেক হাজীর জন্য এই নিয়ম প্রযোজ্য। ইহরাম বাঁধার মাধ্যমেই হজ্জের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:

মনে রাখা জরুরি যে, হজ্জের ফরজ কাজ তিনটি। যদি কোনো ফরজ কাজ ছুটে যায়, তবে হজ্জ আদায় হবে না। অন্যদিকে, ওয়াজিব কাজ ছুটে গেলে দম (কুরবানি) দিয়ে এর ক্ষতিপূরণ করা সম্ভব।

আল্লাহ্‌ তায়ালা সকল মুসলিমকে সঠিকভাবে হজ্জ পালনের তৌফিক দান করুন। আমিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

world travels

owner
View All Articles