Menu

হজের সুন্নাতসমূহ: জেনে নিন গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলো

হজের সুন্নত কয়টি, তা সুনির্দিষ্টভাবে বলা কঠিন। এর কারণ হলো সুন্নাতের ব্যাপকতা এবং ফিকাহবিদদের ভিন্ন ভিন্ন মত। রাসূলুল্লাহ (সা.) হজের সময় যেসব কাজ করেছেন, তার সবই মূলত সুন্নাত। এর মধ্যে কিছু কাজ অধিক গুরুত্বপূর্ণ, আবার কিছু কম গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন ফিকাহবিদ হজের সুন্নাতগুলোকে বিভিন্নভাবে শ্রেণীবদ্ধ করেছেন। কেউ কিছু কাজকে ওয়াজিবের কাছাকাছি বলেছেন, আবার কেউ সেগুলোকে সুন্নাত হিসেবেই উল্লেখ করেছেন।


হজের গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাতসমূহ

সাধারণভাবে হজের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত কাজ নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • ইহরামের পূর্বে গোসল করা: ইহরামের নিয়ত করার আগে গোসল করা সুন্নাত।
  • সুগন্ধি ব্যবহার করা: ইহরামের পূর্বে শরীরে সুগন্ধি লাগানো (পুরুষদের জন্য) সুন্নাত।
  • দু’রাকাত ইহরামের নামাজ পড়া: ইহরামের নিয়ত করার পর দু’রাকাত নামাজ পড়া মুস্তাহাব।
  • তালবিয়া পাঠ করা: ইহরাম বাঁধার পর থেকে তাওয়াফে যিয়ারত শুরু করার পূর্ব পর্যন্ত বেশি বেশি তালবিয়া (“লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক…”) পাঠ করা সুন্নাত।
  • তাওয়াফে কুদুম: মক্কায় পৌঁছে প্রথমবার কাবা শরীফের তাওয়াফ করা (যারা মক্কার বাইরে থেকে এসেছেন) সুন্নাত।
  • মিনাতে ৮ই যিলহজ্জ তারিখে রাত যাপন করা: এটিও হজের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত।
  • আরাফাতের ময়দানে দুপুরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত দোয়া ও যিকিরে মশগুল থাকা: এটি হজের অন্যতম প্রধান সুন্নাত।
  • মুযদালিফায় রাত যাপনের পর সকালে ফজরের নামাজের পর কিছু সময় দোয়া ও যিকির করা: এটিও সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত।
  • মিনায় কঙ্কর নিক্ষেপের সময় “বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার” বলা: কঙ্কর নিক্ষেপের একটি সুন্নাত নিয়ম।
  • কুরবানির পশু নিজ হাতে জবাই করা (সম্ভব হলে): এটিও একটি সুন্নাত কাজ।
  • মাথা মুণ্ডানো বা চুল ছাঁটার পর এহরামের কাপড় খুলে ফেলা: এহরাম থেকে হালাল হওয়ার একটি অংশ।
  • তাওয়াফে বিদা: মক্কা থেকে বিদায় নেওয়ার পূর্বে কাবা শরীফের শেষ তাওয়াফ করা (মক্কাবাসী ব্যতীত অন্যদের জন্য এটি ওয়াজিব হলেও এর পদ্ধতি সুন্নাত অনুযায়ী)।
  • সাঈ করার সময় সবুজ চিহ্নিত স্থানে দৌড়ানো (পুরুষদের জন্য): সাঈ এর একটি সুন্নাতী নিয়ম।
  • হাজরে আসওয়াদের দিকে মুখ করে তাকবীর ও তাহলীল পাঠ করা এবং চুম্বন করা (সুযোগ পেলে): এটিও সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত।
  • যমযমের পানি পান করা ও শরীরে লাগানো: যমযমের পানি পান করা এবং এর বরকত হাসিল করা সুন্নাত।
  • বেশি বেশি নফল ইবাদত করা: যেমন কুরআন তেলাওয়াত, যিকির, দোয়া ইত্যাদি হজের সময় বেশি বেশি করা সুন্নাত।

মোটকথা, রাসূলুল্লাহ (সা.) হজের সময় যেসব কাজ করেছেন এবং সাহাবাদেরকে করতে উৎসাহিত করেছেন, সেগুলোই হজের সুন্নাত। এর সংখ্যা নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন হলেও, উপরে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত কাজের তালিকা দেওয়া হলো। হজের পরিপূর্ণ সওয়াব হাসিলের জন্য সাধ্যমত সুন্নাতগুলো পালন করা উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

world travels

owner
View All Articles