Menu

ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর জন্য সরকারের নতুন ১০ দফা নির্দেশনা: পর্যটন শিল্পে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ

বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের মানোন্নয়ন, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং ট্র্যাভেল এজেন্সিগুলোর কার্যক্রমকে একটি সুশৃঙ্খল কাঠামোর আওতায় আনার লক্ষ্যে সরকার সম্প্রতি ১০ দফা নির্দেশনা জারি করেছে। এই নির্দেশিকাগুলো পর্যটন শিল্পের জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

নির্দেশনাগুলোর বিস্তারিত বিবরণ:

১. লাইসেন্স ও নিবন্ধন:

  • সকল ট্র্যাভেল এজেন্সিকে পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে লাইসেন্স ও নিবন্ধন নিতে হবে।
  • লাইসেন্স ছাড়া কোনো ট্র্যাভেল এজেন্সি কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না।
  • লাইসেন্স ও নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও শর্তাবলী পূরণ করতে হবে।

২. পর্যটকদের নিরাপত্তা:

  • পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
  • পর্যটকদের জন্য নিরাপদ ভ্রমণ পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।
  • পর্যটকদের জন্য বীমা ও অন্যান্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখতে হবে।

৩. সঠিক তথ্য প্রদান:

  • পর্যটকদের কাছে ভ্রমণের সকল তথ্য সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে হবে।
  • ভ্রমণের খরচ, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা এবং অন্যান্য সুবিধা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিতে হবে।
  • কোনো প্রকার মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করা যাবে না।

৪. প্রশিক্ষিত গাইড ও কর্মী:

  • পর্যটকদের জন্য প্রশিক্ষিত গাইড ও কর্মী নিয়োগ করতে হবে।
  • গাইড ও কর্মীদের পর্যটন স্থান, ইতিহাস এবং সংস্কৃতি সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে।
  • তাদের আচরণ ও ব্যবহার হতে হবে বন্ধুত্বপূর্ণ ও পেশাদার।

৫. মানসম্মত সেবা:

  • পর্যটকদের জন্য মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করতে হবে।
  • থাকা, খাওয়া এবং পরিবহনের ব্যবস্থা মানসম্মত হতে হবে।
  • পর্যটকদের অভিযোগ ও পরামর্শ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।

৬. পরিবেশ সংরক্ষণ:

  • পর্যটন স্থানগুলোর পরিবেশ সংরক্ষণে সচেতন থাকতে হবে।
  • পর্যটকদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ দূষণ রোধে উৎসাহিত করতে হবে।
  • স্থানীয় পরিবেশ ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।

৭. স্থানীয় সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ:

  • স্থানীয় সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
  • স্থানীয় হস্তশিল্প, খাবার এবং সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে হবে।
  • স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে হবে।

৮. জরুরি অবস্থা মোকাবিলা:

  • যেকোনো জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে।
  • পর্যটকদের জন্য জরুরি যোগাযোগ ও সহায়তা ব্যবস্থা রাখতে হবে।
  • প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্যান্য অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

৯. নিয়মিত পরিদর্শন ও তদারকি:

  • পর্যটন মন্ত্রণালয় নিয়মিত ট্র্যাভেল এজেন্সিগুলোর কার্যক্রম পরিদর্শন ও তদারকি করবে।
  • কোনো নিয়ম লঙ্ঘন হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
  • পর্যটকদের অভিযোগের ভিত্তিতেও তদন্ত করা হবে।

১০. অনলাইন কার্যক্রম:

  • অনলাইন কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রেও সঠিক তথ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
  • অনলাইন বুকিং ও পেমেন্ট সিস্টেম নিরাপদ হতে হবে।
  • পর্যটকদের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে।

এই নির্দেশনাগুলো সঠিকভাবে মেনে চললে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প আরও উন্নত ও নিরাপদ হবে এবং পর্যটকরা আরও ভালো অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারবেন। সরকারের এই উদ্যোগ পর্যটন শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

world travels

owner
View All Articles